প্রশ্ন : দ্বীনি ইলম অর্জন করার হুকুম কী?
উত্তর : আল-হামদুলিল্লাহ। দ্বীনি ইলম অর্জন করা ফারদুল কিফায়া। যদি কিছু ব্যক্তি দ্বীনি ইলম-অর্জনে মনোনিবেশ করে—যাদের মাধ্যমে প্রয়োজন পূরণ হওয়া সম্ভব—তাহলে অন্যদের ক্ষেত্রে দ্বীনি ইলম অর্জন করা সুন্নাহ। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যক্তিবিশেষের ওপর দ্বীনি ইলম অর্জন করা ফারদুল আইন। এ ক্ষেত্রে নীতি হচ্ছে, ব্যক্তি যে ইবাদত বা লেনদেন করতে চাচ্ছে, সে ইবাদত ও লেনদেন বাস্তবায়ন করার জন্য যতটুকু ইলম প্রয়োজন ততটুকু ইলম অর্জন করা তার ওপর ফারদুল আইন। এর বাইরে যে ইলম, সে ইলম অর্জন করা ফারদুল কিফায়া। তালিবুল ইলমের উচিত আপন মনে এ অনুভূতি জাগ্রত রাখা যে, সে একটি ফারদুল কিফায়া আমল পালন করছে, যাতে করে সে ইলম অর্জনের মাধ্যমে একটি ফরয আদায়ের সওয়াব পায়। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, দ্বীনি ইলম হাসিল সবচেয়ে উত্তম ইবাদত, বরং এটি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদতুল্য। বিশেষত আমাদের বর্তমান সময়ে, যে সময়ে মুসলিমসমাজে বিদআতের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এবং ক্রমান্বয়ে প্রসারিত হচ্ছে। ইলম ছাড়া ফাতওয়া দেওয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক লোক না-জেনে তর্কে লিপ্ত হচ্ছে। মুসলিম যুবসমাজের ওপর এ তিনটি কারণ ইলম-অর্জনে এগিয়ে আসাকে অনিবার্য করে দেয়,
এক : বিদআতের বহিঃপ্রকাশ।
দুই : উপযুক্ত ইলমদার না হয়েও ফাতওয়া-প্রদানে এগিয়ে আসা।
তিন : এমন সব মাসআলা নিয়ে তর্ক করা, যে মাসআলাগুলো আলিমদের কাছে সুস্পষ্ট। কিন্তু এমন ব্যক্তি এসব মাসআলা নিয়ে তর্ক করেন, যার এ ব্যাপারে কোনো ইলম-ই নেই।
এসব কারণে আমাদের এমন কিছু আলিম প্রয়োজন, যাদের জ্ঞান সুদৃঢ় ও ব্যাপক। দ্বীনের ব্যাপারে যাদের গভীর জ্ঞান রয়েছে। আল্লাহর বান্দাদের দিকনির্দেশনা দেওয়ার মতো যাদের প্রজ্ঞা আছে। এমন অনেক মানুষ রয়েছে, যাদের কাছে শুধু বিশেষ কোনো মাসআলার তাত্ত্বিক জ্ঞান রয়েছে। কিন্তু মানুষের জন্য কোনটা কল্যাণ বা মানুষের শিক্ষাদান পদ্ধতি তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই কোনো কোনো বিষয়ে তাদের ফাতওয়া বড় ফিতনা-ফাসাদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়; যে ফিতনার পরিধি আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।
আল্লাহই ভাল জানেন।
__________
ফাতওয়াসূত্র : ইসলামকিউএ (২০০৯২)