মাহজাবিন খান শম্পা
বিয়ে নিয়ে আজকাল দুই ধরনের চিন্তাভাবনা লক্ষ করা যায়—ফ্যান্টাসি ও দুশ্চিন্তা। বিয়ে নিয়ে বোনদের কেবল দুশ্চিন্তাই করতে দেখেছি। মেয়েরা বিয়ে নিয়ে রোমান্টিক গল্পের চাইতেও হরর গল্পগুলো মনে রাখে বেশি। নেতিবাচক কিছু যে ঘটছে না, তা নয়। কিন্তু ইতিবাচকগুলো আমরা জানতে পারি কম। সুখ-শান্তির কথা, স্বামী-স্ত্রীর খুনসুটির কথা আলোচনা কম হওয়াটাই স্বাভাবিক। লজ্জাশীলতা কিংবা বদনজরের ব্যাপারগুলো আছে না? তাই বলে কি কেউ সুখে নেই?
বোনেরা, বি পজিটিভ। বিয়ের জন্য সবার আগে প্রয়োজন আল্লাহর প্রতি সুধারণা ও ইতিবাচকতা। কারও খারাপ অভিজ্ঞতা শুনলে মন থেকে তার জন্য কল্যাণের দুআ করে দেবেন। কিন্তু নিজের মনে ভয় আনবেন না যেন। আল্লাহর কাছে নিজের ভবিষ্যৎ জীবনসাথী ও সংসারের জন্য মন খুলে দুআ করুন। তার প্রত্যেকটা গুণের ব্যাপারে আল্লাহকে বিস্তারিত বলবেন। কোনো গুণ বাদ রাখবেন না। শতভাগ পাব না, এটা মাথায় নিয়ে চাওয়া যাবে না। শতভাগটাই আল্লাহকে বলবেন। দেয়ার মালিক আল্লাহ। বিয়ের জন্য বোধ করি তিন ধরনের প্রস্তুতি প্রয়োজন—আত্মিক, মানসিক ও শারীরিক।
আত্মিক প্রস্তুতি
আত্মিক প্রস্তুতি হলো আল্লাহর সাথে সম্পর্কটা মজবুত করা। আমল-আখলাককে একটু ঘষামাজা করে পরিষ্কার করা। মাঝেমধ্যে কিছু বোন জিজ্ঞেস করেন, আপু জীবনে অনেক গুনাহ করে ফেলেছি; আমি কী উত্তম জীবনসঙ্গী পাব? সবসময় মনে রাখবেন, কেউ যতই পুণ্যের কাজ করুক না কেন, সে মানুষ হিসেবে আল্লাহর খুবই তুচ্ছ ও গুনাহগার বান্দা। আল্লাহ আপনাকে নিজ রহমতে ক্ষমা করে দিয়ে উত্তম জীবনসঙ্গী দিতে কার্পণ্য করবেন না। আল্লাহর কাছে তাই খুব করে ক্ষমা ও রহমত চাইবেন। আপনার মাঝে কৃত গুনাহের অনুশোচনা থাকতে হবে। ক্ষমা চেয়ে সংশোধন ও কল্যাণের দুআ করতে হবে। আপনার কাজ অনুশোচনায় ভোগে হতাশ হওয়া নয়, বরং অনুশোচনার সাথে সুধারণা করা। আল্লাহ নিজে বলেছেন তিনি বান্দার ধারণা অনুসারে তার সাথে আচরণ করবেন। আপনি গুনাহগার হতে পারেন, কিন্তু আল্লাহ আপনাকে একজন উত্তম জীবনসঙ্গী দিতেই পারেন। দেখবেন আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে শেষ করতে পারছেন না। দেখা যাবে এভাবে আপনি একটি কৃতজ্ঞ অন্তরের সাথে আল্লাহর দিকে দৌড়াচ্ছেন। তাই বলে আত্মশুদ্ধির চেষ্টা বাদ দেয়া যাবে না।
মানসিক প্রস্তুতি
বিয়ের ক্ষেত্রে মানসিক প্রস্তুতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিয়ে নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা বাদ দিয়ে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিন। ফ্যান্টাসি ও দুশ্চিন্তা দুটোই এড়িয়ে যেতে হবে। সংসার জীবনের জন্য কিছু স্কিল ডেভেলপ করে নেবেন। এখানে স্কিল বলতে শুধু সাংসারিক কাজকর্ম বোঝাচ্ছি না। এটা তো আছেই। রাগ দমন করা, তর্ক পরিহার এবং নিজের অপছন্দনীয় কিছু দেখলে সেটা এড়িয়ে যাওয়া অর্থাৎ মানিয়ে নেয়াটাও আপনার স্কিল।
শারীরিক প্রস্তুতি
শারীরিক প্রস্তুতি হিসেবে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করবেন। বিয়ে নিয়ে পেরেশানি থাকলে সেটা যথাসাধ্য এড়িয়ে এবং নিজের চেষ্টা জারি রেখে আরামে সময়মতো ঘুমাবেন। নিজেকে খুশি রাখার জন্য একটু সাজগোজ করবেন মাঝেমধ্যে। ত্বকের যত্ন নেবেন। নিজেকে নিয়ে কোনো প্রকার হীনম্মন্যতায় ভুগবেন না। আপনি দেখতে যেমন, সেভাবেই আপনি খুব সুন্দর, মাশাআল্লাহ। আল্লাহ আপনাকে সুন্দরতম অবয়বে সৃষ্টি করেছেন।
‘সুরা ত্বিন’-এ কি আল্লাহ বলেননি—অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সর্বোত্তম গঠনে? [সুরা ত্বিন, ৯৫ : ৪]
আপনার জন্য যাকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তার চোখে ও মনে আপনার চেয়ে প্রশান্তিময় আর কেউ নেই। বিয়ের পর স্বামীর জন্য সাজগোজ করবেন। সাজতে এত আয়োজন বা সময় লাগেনা। পরিপাটি থাকবেন। সাজ বলতে একটু কাজল, লিপস্টিক, পারলে একদম পাতলা করে আইলাইনারই যথেষ্ট। সাজগোজ দেখানোর জন্য হাতে ঢের সময় থাকলে ইচ্ছেমতো সাজবেন। স্বামী হালকা বা ভারী যেমন সাজে দেখতে পছন্দ করে সেভাবে সাজবেন। একান্নবর্তী পরিবারের (জয়েন্ট ফ্যামিলি) অজুহাতে লজ্জায় অল্প হলেও সাজগোজ এড়িয়ে যাবেন না। স্বামী আপনার। নিজের হালাল স্বামীর জন্য আপনি যা কিছু ভালো করবেন, তা অবশ্যই শালীনতা বজায় রেখে নিঃসংকোচে করবেন। জানি, পরিবার একটু উদারমনা হলে বিষয়টা খুব সহজ। তবে ফাঁকে ফাঁকে চেষ্টা করা বাদ দেবেন না। তাদের চোখে স্বামীর জন্য শালীন প্রচেষ্টাকে একটু একটু করে স্বাভাবিক করে তুলবেন।
সহ্য হচ্ছে না!
প্রত্যেক মানুষ ভিন্ন ব্যক্তিত্ব ও চিন্তাভাবনার অধিকারী। জীবনসঙ্গী বা পরিবারের মাঝে অপছন্দনীয় কিছু দেখলে বিরক্ত হওয়া চলবে না। কিছু বলে ফেলার আগে বা তাদের আপনার সহ্য হচ্ছে না, এসব বলার আগে ভাবুন সেই বিষয়টা আসলেই অশান্তি করার মতো কিছু কি না। যদি তা না হয়, তাহলে শুধু নিজের ভালো লাগে না বলে সেটা নিয়ে অশান্ত হওয়া বা ঝামেলা করার কোনো মানে নেই। হতেই পারে এটা কেবলই চিন্তাভাবনা ও প্রয়োগের ভিন্নতা।
তাড়াহুড়ো করবেন না
আপনি বাবার বাড়িতে যেভাবে চলেছেন একই পদ্ধতি শ্বশুরবাড়িতে বজায় নাও রাখতে পারেন। এসব নিয়ে হতাশ হওয়া যাবে না। নিয়মতান্ত্রিকতার অভাব দেখলে ধীরে ধীরে টেকনিক্যালি হ্যান্ডেল করবেন। আপনার ও তাদের চালচলনের মাঝে কিছুটা ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করবেন। তাড়াহুড়ো করবেন না। আপনার সংসার ও স্বামী একদিনের জন্য নয়, সারাজীবনের জন্য। তাই রিল্যাক্স!
নিরাপত্তাবোধ
বিয়ের পাত্র ও পরিবারের সাথে দেখাসাক্ষাতের ক্ষেত্রে আপনি কতটুকু নিরাপদবোধ করছেন, শান্তি অনুভব করছেন, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অন্য মানুষের কাছে তখনই নিরাপদবোধ করি, যখন তাদের সাথে আমাদের ভালো চিন্তাভাবনার মিল খুঁজে পাই কিংবা তাদের চিন্তাভাবনা আমাদের চেয়েও ভালো দেখতে পাই। এই নিরাপত্তাবোধটা জরুরি। কারও সাথে কথা বলে, কাউকে দেখে, খোঁজ-খবর নিয়ে অন্তরে প্রশান্তি আছে না কি অশান্তি, এই ব্যাপারগুলো বিয়ের ক্ষেত্রে আমলে নেয়া উচিত। কথাবার্তা বা চলাফেরার মাধ্যমে মানুষের অন্তর দেখা যায় না, তা ঠিক; কিন্তু অনেকটা হলেও বোঝা যায়। তাই পর্যবেক্ষণ করা ও খোঁজ নেয়া উচিত।
ভাবিয়া করিয়ো কাজ
যেকোনো মেয়ের বিয়ের ক্ষেত্রে শ্বাশুড়ির পছন্দ হওয়াটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর ওপর বিবাহিত জীবনের অনেক কিছু নির্ভর করে। অবিবাহিত বোনেরা যদি শোনেন পাত্রসহ সবার পছন্দ হলেও পাত্রের মায়ের আপনাকে বিশেষ পছন্দ হয়নি, তাহলে সেই পরিবারে যাওয়ার আগে শতবার ভাববেন। সেই আলাপই উপেক্ষা করবেন। যদিও সব আল্লাহর ইচ্ছা।
পাত্র যাচাই
পাত্রকে প্রশ্নের ক্ষেত্রে আমল-আখলাক সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন রেখে সাথে জীবনঘনিষ্ঠ, সাংসারিক দায়-দায়িত্ব ও হক-সম্পর্কিত প্রশ্ন করলে ভালো। আপনাকে পাত্রের দায়িত্বশীলতা ও পরিপক্বতা (maturity) যাচাই করতে হবে। পারিবারিক মূল্যবোধ, পরিবারের প্রতি তার দায়িত্বশীলতা, এই ব্যাপারগুলো দেখার দিন প্রশ্ন ও কথাবার্তায় পর্যবেক্ষণ করে জেনে নিতে হবে। স্ত্রীর প্রতি তার দায়িত্বশীলতা কেমন হবে—এটাই কেবল প্রশ্নে না-রেখে পুরো পরিবারের প্রতি তার আবেগ-অনুভূতি জেনে নেবেন। এটা আপনার নিজ দায়িত্ব-কর্তব্য বোঝা সহজ করবে আর সাথে তার পরিপক্বতা (maturity) আর দায়িত্ববোধও বোঝা যাবে। আমি, আমার স্ত্রী, আমার স্বামী—এই ‘আমি’ ‘আমি’ সব যুগলের ক্ষেত্রে খাটে না হয়তো। যারা পরিবার নিয়ে থাকেন, তাদের ক্ষেত্রে আপনি তার ব্যক্তিগত জীবনকেন্দ্রিক প্রশ্নে সীমাবদ্ধ থাকতে পারবেন না। যদি তিনি নিজ থেকেই তার পরিবারের প্রতি দায়দায়িত্ব, আবেগ-অনুভূতির কথা বলে দেন, তাহলে তো আপনার কাজ আরও সহজ হয়ে গেল। কারও অতীত নিয়ে টু শব্দ করবেন না। এর মানে দাঁড়ায়, আপনি সন্দেহপ্রবণ এবং সেই মানুষটার প্রতি যথেষ্ট পরিমাণ বন্ধুত্বপূর্ণ হতে পারবেন না। দ্বীনে ফেরার পর থেকে মানুষটা কেমন, আপনার জানার বিষয় ঠিক সেটিই।
স্বামী বাছাই
জীবনসঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই দ্বীনকে প্রাধান্য দেবেন। তবে আপনার কুফু অনুসারে কিছু বিষয় সঙ্গতিপূর্ণ উপায়ে চাওয়াটা অন্যায় নয়। আবার বিষয়টা এমন না যে আপনি দুনিয়াবি জিনিসগুলো একেবারেই ছাড় দেবেন না। ছাড় না-দিয়ে উল্টো এভাবে সময়ই নষ্ট করবেন। কিছুটা ছাড় দেয়া লাগতেই পারে, আবার নাও লাগতে পারে। যতটুকু ছাড় দেয়াটা আপনার কাছে স্বাভাবিক ও সন্তুষ্টজনক মনে হবে, সেভাবে ছাড় দেবেন। দ্বীনি ইলমের স্তর মানানসই কি না, সেটার চেয়েও জরুরি হলো জীবন নিয়ে চিন্তাভাবনার মিল রয়েছে কি না, আচার-আচরণে মিল হয় কি না। ইমান-আকিদাহর সাথে চিন্তাভাবনার মিল থাকলেই হলো। বাকি মোটা মোটা তাত্ত্বিক জ্ঞানের ক্ষেত্রে কেউ আপনার মতো না-ই হতে পারে। সংসারে এগুলো কাজে আসে না। শুধু ভাবনার মিল কাজে আসে। ইলমের স্তর মিলে গেলে সেটা উপরিলাভ। কারও নফল আমলের চেয়ে ফরয আর সুন্নাহতে গুরুত্ব দেবেন বেশি। অনেক সময় দেখা যায় কেউ তাহাজ্জুদগোজার না হলে তার দ্বীনদারিতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলে মানুষজন। এটা অনুচিত। ফরযপালনে ধারাবাহিকতা ও দৃঢ়তা, হালাল-হারামের জ্ঞান ও এ ক্ষেত্রে দৃঢ়তা এবং আল্লাহ ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ভালোবাসাপূর্ণ অন্তরকেই গুরুত্ব দেয়া উচিত।
ভয়কে করো জয়
আরেকটা বিষয় হলো, বিয়ে নিয়ে আতঙ্ক রাখবেন না। আতঙ্ক মন খুলে করা দুআ ব্যাহত করে। তাকদিরে থাকলে বিয়ে হবেই। তাই অযথা ভয় নিয়ে ঘুরবেন না। ভালো-খারাপের দুনিয়া। চারদিকে খারাপ যেমন আছে, ভালোও তো আছে। কেন নেতিবাচকটাই মাথায় রাখা লাগবে? মাথা থেকে সব নেতিবাচকতা ঝেড়ে ফেলে দিন। কারও খারাপটা শুনলে তার কল্যাণের দুআ করুন। স্বাভাবিক থাকুন। শিশুদের মতো নির্ভাবনা থাকুন। তারা কেমন সহজ-সরল চিন্তা করে, তাই না? দুনিয়া যেমনই হোক, আল্লাহ আমাকে ভালো রাখবেন। এমন একটা চিন্তা লালন করুন। আল্লাহর প্রতি সুধারণা রেখে মন খুলে আল্লাহকে বলুন কেমন মানুষ, কেমন পরিবার চান। জীবনসঙ্গীর আমল-আখলাকের ছোট-বড় কিছুই বাদ রাখবেন না। দ্বীন, দুনিয়া, চেহারা, পেশা, শিক্ষা, পরিবার, বংশমর্যাদা, মন -মানসিকতা প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে আপনার পছন্দ আল্লাহকে বলুন। আকাঙ্ক্ষা রাখা খারাপ কিছু নয়। তাই আকাঙ্ক্ষা রাখবেন, উচ্চাকাঙ্ক্ষা নয়।
দুআ, দুআ, দুআ
‘সুরা ফুরকান’-এর ৭৪ নং আয়াত তো পড়বেনই। আর ‘সুরা কাসাস’-এর ২৪ নং আয়াত বেশি করে পড়বেন। ইসতিগফার জারি রাখবেন। যাকারিয়া আলাইহিস সালামের একটি দুআ আমার ভীষণ পছন্দ—ও রব, আমাকে একা রেখো না; তুমি তো উত্তম ওয়ারিস। [সুরা আল-আম্বিয়া, ২১ : ৮৯]
এ ছাড়াও মনের প্রশান্তির জন্য, পেরেশানি থেকে মুক্ত হবার জন্য দুআ করুন। মন খারাপ, খুব কান্না আসছে? দুআ করুন। মন ভালো, ফুরফুরে; দুআ করুন। দুআ কবুলের কোনো সময়-সুযোগ বাদ দেবেন না। সর্বাবস্থায়ই আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায়ের সাথে দুআ করুন। অন্যের জন্য বেশি করে দুআ করবেন। কাওকে সুখে দেখলে তার জন্য দুআ করুন। পেরেশান দেখলে দুআ করুন। বিয়ে নিয়ে যাকেই পেরেশান দেখবেন, তার জন্যও ঠিক সেভাবেই দুআ করুন যেমনটা নিজের জন্য আপনি আশা করেন। এভাবে আপনি মালাকদের দুআও পেয়ে যাবেন।
অসহায়ত্বের সময়টা কাজে লাগাতে চেষ্টা করুন। আল্লাহকে বলুন আপনি আর পারছেন না। আপনি বলতে না-পারলেও আপনার রব সব জানেন। তাই, আল্লাহর রহমত থেকে হতাশ হওয়া যাবে না। দুআ করা বাদ দেয়া যাবে না। জীবনসঙ্গী হতে হবে এলার্ম ক্লকের মতো। আপনি ঘুমিয়ে গেলে অর্থাৎ দ্বীনপালনে একটু এদিক-ওদিক হলে আপনাকে জাগিয়ে দেবে। তাই আপনিও ঘুমিয়ে থাকবেন না। প্রস্তুতি আপনাকেও নিতে হবে।
ভেবে নিন, অপেক্ষার এই প্রহরগুলোতে আপনি হলেন কাদামাটি। নতুন একটা ভালোবাসাকে বোঝার জন্য আপনাকে উত্তমরূপে প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই ভালোবাসার সম্পর্কটা আর কোনো সম্পর্কের সাথে মেলে না। এই সম্পর্ক বিশেষভাবে আলাদা। আপনি এই সময়টায় সেই সম্পর্কের কদর করা শিখছেন। আপনাকে প্রস্তুত করা হচ্ছে যেন আপনি এসব দায়িত্ব-কর্তব্যের জন্য নিখুঁত হয়ে ওঠেন। প্রাপ্তিগুলোর গুরুত্ব বুঝে রবের কাছে কৃতজ্ঞ অন্তরের সাথে যেন নত থাকেন। দেখবেন, একদিন দুআগুলো হুট করে কবুল হয়ে যাবে। যেন কোনোদিন আপনি পেরেশানই ছিলেন না। কোনোদিন আপনি কষ্টই পাননি। কোনোদিন আপনাকে কোনো বিষণ্ণতা স্পর্শই করেনি।
লা-তাহযান।
__________________________
ভাষা-সম্পাদনা : অনুবাদ ও সম্পাদনা পর্ষদ