আদম-সন্তানদের মাঝে কি ভাইবোনে বিয়ে হতো?

প্রশ্ন : আমার চাচির পক্ষ থেকে প্রশ্নটি উত্থাপন করছি। কারণ, বিষয়টি তাকে খুবই উৎকণ্ঠিত করে তুলেছে। এটি মানবপ্রজন্মের শুরু প্রসঙ্গে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহর নবি আদম আলাইহিস সালামের কথা স্পষ্টাকারে এসেছে। জান্নাত থেকে পৃথিবীতে নেমে আসার কথাও স্পষ্ট বর্ণনায় রয়েছে। তবে আদম ও হাওয়া, এ দুজনই যে কেবল মানবপ্রজন্মের একমাত্র মাতা-পিতা ছিলেন তার কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা নেই। অর্থাৎ তাঁরা দুজনই যদি সে সময়ে কেবল পৃথিবীর বুকে একমাত্র মানব হয়ে থাকেন—যাদের ছেলে সন্তান ছিল—তাহলে মানবপ্রজন্ম তাঁদের পর বংশ বিস্তার করল কীভাবে? তবে কি বলব যে, সে সময়ে ভাই-বোনে বিয়ে বৈধ ছিল আর এ ধরনের বিয়ে থেকেই সন্তানসন্ততি জন্ম নিয়েছে?

উত্তর : আল-হামদুলিল্লাহ। আল্লাহ কুরআনে উল্লেখ করেছেন, সকল মানুষ আদম ও তাঁর স্ত্রীর বংশবিস্তারের ফসল। আল্লাহ বলেন,

يَٰأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱتَّقُوا۟ رَبَّكُمُ ٱلَّذِى خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَٰحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَآءًۚ

‘হে মানুষ তোমরা তোমাদের রবকে ভয় করো, যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এক নফস থেকে। আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে এবং তাদের থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী।’ [সুরা আন-নিসা, ৪ : ১]

অন্যত্র বলেন,

هُوَ ٱلَّذِى خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَٰحِدَةٍ وَجَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا لِيَسْكُنَ إِلَيْهَاۖ فَلَمَّا تَغَشَّىٰهَا حَمَلَتْ حَمْلًا خَفِيفًا فَمَرَّتْ بِهِ

‘তিনিই সে সত্তা যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক ব্যক্তি থেকে এবং তার থেকে বানিয়েছেন তার সঙ্গিনীকে, যাতে সে তার কাছে প্রশান্তি লাভ করে। তারপর যখন সে তার সঙ্গিনীর সাথে মিলিত হলো, তখন সে হালকা গর্ভধারণ করল এবং তা নিয়ে চলাফেরা করতে থাকল।’ [সুরা আল-আরাফ, ৭ : ১৮৯]

আদমের মানবপ্রজন্মের পিতা হওয়ার ব্যাপারে এটি একটি স্পষ্ট প্রমাণ। আদম থেকেই মানবজাতির বংশ বিস্তৃত হয়েছে। পৃথিবীতে যত মানুষ রয়েছে আদম ও তাঁর স্ত্রীই তাদের মূল। হাদিসে এসেছে, আদম ও হাওয়ার গর্ভে প্রতিবার একটি ছেলে  ও একটি মেয়ে সন্তান জন্ম নিত। তারা যখন বড় হতো, ছেলেকে তার আগে জন্ম নেওয়া মেয়ের সাথে বিয়ে দেওয়া হতো এবং মেয়েকে তার আগে জন্ম নেওয়া ছেলের সাথে। এটা তখন বৈধ ছিল, যদিও তারা ছিল একই মায়ের সন্তান। এটা বৈধ ছিল প্রয়োজনের কারণে। তারা  সংখ্যায় বেড়ে গেলে ভাই-বোনের বিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। আল্লাহই উত্তম জ্ঞানী।

__________

ফাতওয়াদাতা : শাইখ আবদুল্লাহ ইবনু জিবরিন (রাহিমাহুল্লাহ)

[ সংগ্রহসূত্র : ইসলামহাউজ ]