তারা মানুষকে রব বানিয়ে নিয়েছে : ইমাম ইবনু কাসির

[et_pb_section fb_built=”1″ admin_label=”section” _builder_version=”4.16″ global_colors_info=”{}”][et_pb_row admin_label=”row” _builder_version=”4.16″ background_size=”initial” background_position=”top_left” background_repeat=”repeat” global_colors_info=”{}”][et_pb_column type=”4_4″ _builder_version=”4.16″ custom_padding=”|||” global_colors_info=”{}” custom_padding__hover=”|||”][et_pb_text admin_label=”Text” _builder_version=”4.16″ background_size=”initial” background_position=”top_left” background_repeat=”repeat” global_colors_info=”{}”]

 

 اِتَّخَذُوۡۤا اَحۡبَارَهُمۡ وَ رُهۡبَانَهُمۡ اَرۡبَابًا مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ وَ الۡمَسِیۡحَ ابۡنَ مَرۡیَمَ

 ‘আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা তাদের আলিম আর দরবেশদের রব বানিয়ে নিয়েছে; আর মারইয়ামপুত্র মাসিহকেও।’ [সুরা আত-তাওবাহ, ৯ : ৩১]

ইমাম আহমাদ, তিরমিযি ও ইবনু জারির (রাহিমাহুমুল্লাহ) আদি ইবনু হাতিম রাদিয়াল্লাহু আনহুর সূত্রে বর্ণনা করেন, তাঁর কাছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াত পৌঁছলে তিনি পালিয়ে শামে চলে যান। জাহিলি যুগে তিনি খৃষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর জাতির একদল লোকসহ তাঁর বোনও বন্দি হয়। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বোনের প্রতি দয়া করে মুক্ত করাসহ কিছু উপঢৌকনও দেন। পরবর্তীকালে তিনি তাঁর ভাইয়ের কাছে ফিরে এসে তাকে ইসলাম গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেন আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যেতে বলেন। আদি মদিনায় আসেন। তিনি ছিলেন তাঁর তায়ি সম্প্রদায়ের সর্দার। তাঁর বাবা হাতিম তায়ি বদান্যতার জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। লোকেরা তাঁর আসার কথা বলাবলি করতে থাকে। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে প্রবেশ করেন। এ সময় আদির কাঁধে রূপার ক্রুশ ছিল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াত পড়লেন, ‘আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা তাদের আলিম আর দরবেশদের রব বানিয়ে নিয়েছে—اِتَّخَذُوۡۤا اَحۡبَارَهُمۡ وَ رُهۡبَانَهُمۡ اَرۡبَابًا مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ।’  তিনি (আদি) বলেন—তারা তো ওদের ইবাদত করেনি। ফলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন—তা বটে; কিন্তু তারা তাদের ওপর হালাল বিষয়কে হারামে পরিণত করেছে আর তাদের জন্য হারাম বিষয়কে হালালে পরিণত করেছে, এরপর তারা তাদের অনুসরণ করেছে, আর এভাবেই তারা তাদের ইবাদত করেছে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘হে আদি তুমি কি “আল্লাহু আকবার” বলার ভয়ে শামে পালিয়ে গিয়েছিলে? তোমার কি জানা আছে, আল্লাহর চেয়ে বড় কিছু রয়েছে? কীসে তোমাকে পালাতে উদ্বুদ্ধ করেছিল? لا إله إلا الله বলতে হবে বলে কি তুমি পালিয়েছিলে? আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোনো ইলাহ রয়েছে বলে কি তোমার জানা আছে?’ এরপর তিনি তাঁকে ইসলামের দাওয়াত দিলে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং সত্যের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাঁর চেহারায় খুশির ঝিলিক দেখতে পাই। এরপর তিনি বলেন—ইয়াহুদিরা হচ্ছে অভিশপ্ত, আর খৃষ্টানরা পথভ্রষ্ট।’হুযাইফাহ ইবনুল ইয়ামান, আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাসসহ অনেকেই ‘আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা তাদের আলিম আর দরবেশদের রব বানিয়ে নিয়েছে—اِتَّخَذُوۡۤا اَحۡبَارَهُمۡ وَ رُهۡبَانَهُمۡ اَرۡبَابًا مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ।’ আয়াতের তাফসিরে এ মত ব্যক্ত করেন যে, তারা যা কিছু হালাল ও হারাম করে দিয়েছিল তাই তারা মেনে নিয়েছিল। এ কারণে আল্লাহ বলেন, ‘অথচ তাদের এক ইলাহ ছাড়া আর কারও ইবাদতের আদেশ দেওয়া হয়নি—وَمَآ أُمِرُوٓا۟ إِلَّا لِيَعْبُدُوٓا۟ إِلَٰهًا وَٰحِدًاۖ।’ অর্থাৎ কোনো জিনিসকে যখন তিনি হারাম করেন তখন তা হারাম, আর যা তিনি হালাল করেন সেটা হালাল বলে গণ্য। তিনি যে আইন দিয়েছেন তা পালনীয় আর তিনি যে নির্দেশ দিয়েছেন অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে। ‘তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোনো ইলাহ নেই, তারা যাদের শরিক গণ্য করে তা থেকে তিনি পবিত্র—لَّآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۚ سُبۡحَٰنَهُۥ عَمَّا يُشۡرِكُونَ।’ তিনি সুউচ্চ, পবিত্র; শরিক, সমকক্ষ, সাহায্যকারী, প্রতিপক্ষ এবং সন্তানসন্তুতি থেকে মুক্ত। তিনি ছাড়া প্রকৃত কোনো ইলাহ নেই, তিনি ছাড়া কোনো রব নেই।

____________________

[ সংগ্রহসূত্র : ইসলামহাউজ, তাফসিরু সুরাতিত তাওবাহ ] 

[/et_pb_text][/et_pb_column][/et_pb_row][/et_pb_section]